যখন কোনও বাড়িওয়ালা তার বাড়ির ভাড়া দেন বা ভাড়াটে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তখন এই ধরনের কার্যক্রমগুলি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় পড়ে। প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব রেন্ট কন্ট্রোল অ্যাক্ট রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মহারাষ্ট্রে ‘রেন্ট কন্ট্রোল অ্যাক্ট 1999′ নামে রয়েছে, দিল্লীতে ‘রেন্ট কন্ট্রোল অ্যাক্ট 1958’ এবং চেন্নাইতে ‘তামিলনাডুর বিল্ডিং (লিজ এন্ড রেন্ট কন্ট্রোল) অ্যাক্ট, 1960’ আছে। ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের বিস্তৃত ধারণাগুলি বাড়িওয়ালা (লাইসেন্সকারী) এবং ভাড়াটে (লাইসেন্সধারী) এর মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি করে।
ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্য
জেএলএল ইন্ডিয়া এর সিইও এবং কান্ট্রি হেড রমেশ নায়ার ব্যাখ্যা করেন যে, “ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন ভাড়াটেদের নিরাপত্তা প্রদান করে এবং বাড়িওয়ালাদের তাদের ভাড়াটেদের উচ্ছেদ করার ক্ষমতাকে সীমিত করে দেয়। এটি, বাড়িওয়ালা এবং ভোক্তাদের,উভয়েরই, প্রতারণার সম্ভাবনার সমস্যাকে দূর করে দেয় । ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল:
- এটি সম্ভাব্য ভাড়াটেদের ভাল ভাড়া থাকার জায়গা সনাক্ত এবং সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য, সম্পদের ভাড়া দেওয়ার উপর বিভিন্ন আইন জারি করে।
- এটি ন্যায্য, প্রমিত ভাড়ার সীমা ধার্য্য করে, যার বাইরে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভাড়াটেদের চার্জ করা যায় না।
- এটা তাদের বাড়িওয়ালাদের দ্বারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং বেআইনি ভাবে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে ভাড়াটেদের রক্ষা করে।
- এটি ভাড়াটে বাড়িগুলির রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে বাড়িওয়ালাদের দায়িত্ব এবং তাদের ভাড়াটেদের প্রতি কর্তব্যের নির্দেশ করে।
- এটি স্পষ্টভাবে সেই বাড়িওয়ালাদের অধিকার সংজ্ঞায়িত করে, যাদের ভাড়াটে সঠিক সময়সীমার মধ্যে ভাড়া প্রদানের দায়িত্ব পালন করে না বা সম্পত্তির অপব্যবহার করে।”
ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন কিভাবে ভাড়াটের স্বার্থ রক্ষা করে?
এই আইন নিশ্চিত করে যে ভাড়াটেদের যথেষ্ট কারণ ছাড়া বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না। এই আইনটিতে ভাড়াটের উচ্ছেদের সম্মুখীনতার জন্য বিভিন্ন সুরক্ষা রয়েছে। একইভাবে, আইনে আদেশ দেওয়া হয়েছে যে কোনও বাড়িওয়ালা কোনও পর্যাপ্ত কারণ ছাড়াই ভাড়াটিয়ার কোন অত্যাবশ্যক সরবরাহ বা পরিষেবা বন্ধ করে দিতে বা আটকে রাখতে পারে না I
অমিত হারিয়ানি, হারিয়ানি এন্ড কোং এর ম্যানেজিং পার্টনার, ব্যাখ্যা করেন “এই আইন অনুযায়ী, বাড়িওয়ালা যে কোনো স্থানের ছাড়ার জন্য চুক্তি বা লাইসেন্স বা যে কোন প্রাঙ্গন মুক্ত করে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করবেন ।যদি কোনো বাড়িওয়ালা ভাড়াটের সঙ্গে চুক্তি রেজিস্টার না করেন, তাহলে ভাড়াটের সাথে বিবাদে, লিজের শর্তাবলী আগের মতোই থাকবে, যতক্ষণ না বাড়িওয়ালা অন্য কোনো শর্তাবলী প্রমান করছেন I আইন অনুযায়ী বাড়িওয়ালা ভাড়াটের যে কোন পেমেন্টের জন্য লিখিত রশিদ দিতে বাধ্য । যদি ভাড়াটে ব্যক্তি মারা যান, তাহলে সেই রশিদটি ভাড়াটের পরিবারের অন্য কারোর নামে হবে (অ্যাক্টে উল্লেখ অনুযায়ী)। বাড়িওয়ালা লিখিত রশিদ না দিতে পারা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে I”
ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন কিভাবে বাড়িওয়ালাদের স্বার্থ রক্ষা করে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে আইন অনুযায়ী, বাড়িওয়ালার যদি কোন বাস্তবিক উদ্দেশ্যে বাড়িটির প্রয়োজন পড়ে,তবে বাড়িওয়ালা ভাড়া স্থানের মালিকানা ফিরে পেতে পারেন। অনুরূপভাবে, আইনটিতে বলা হয়েছে যে, সেক্ষেত্রে ভাড়াটে একটি বিকল্প বাসস্থান প্রাপ্য, বাড়িওয়ালা তার অধিকার প্রয়োগ করতে এবং ভাড়াটে স্থান পুনরুদ্ধার করতে পারে।
হরিয়ানি আরো বলেন, ”প্রায়ই,ভাড়াটে প্রাঙ্গণগুলি পুরানো হয় এবং জীর্ণ অবস্থায় থাকতে পারে। অতএব, এই ভবনগুলির পুনর্নির্মান সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক আইন অনুসারে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য এই আইনটি বাড়িওয়ালাদের তাদের অধিকার প্রয়োগের অনুমতি দেয়। “
কিছু উদাহরণ যেখানে ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগ করা যাবে না
যে প্রাঙ্গনগুলি ব্যাঙ্ক, সরকারি খাতে দেওয়া অথবা কোনও সরকারি বা কেন্দ্রীয় আইনের দ্বারা বা অধীনে প্রতিষ্ঠিত কোন নিগম/ কর্পোরেশন, বা বিদেশী মিশন, বহুজাতিক সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে সরাসরি ভাড়া দেওয়া বা ভাড়াটেদের দ্বারা ভাড়া দেওয়া ইত্যাদিকে এই আইনের প্রয়োগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই আইন সেইসব প্রাঙ্গনে প্রযোজ্য নয় যেগুলি প্রাইভেট লিমিটেড এবং পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীর কাছে এক কোটি টাকা বা তার বেশী অংশীদারিত্বের অধিকারী ।